শেয়ার এর মানে হলো ভাগ। শেয়ার মার্কেট এমন এক জায়গা যেখানে আপনি কোনো কোম্পানির শেয়ার বা কোম্পানির মালিকানার ভাগ কেনা বেচা করতে পারেন।
আক্ষরিক অর্থে, শেয়ার বাজার হলো এমন একটি জায়গা যেখানে বিভিন্ন তালিকাভুক্ত সংস্থার অংশীদারি কেনা এবং বিক্রয় করা হয়, বোম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই) নামে ভারতে দুটি বড় স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে।
বিএসই বা এনএসইতে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার দালালের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত কেনা ও বেচা হয়। একই সাথে বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং ডেরিভেটিভস শেয়ারও বাজারে লেনদেন করা হয়।
দেশীও বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও (এফআইআই বা এফপিআই) বড় রিটার্নের প্রত্যাশা নিয়ে শেয়ার বাজারে প্রচুর বিনিয়োগ করে।
শেয়ার কেনা মানে?
ধরুন এনএসইতে(NSE) তালিকাভুক্ত একটি সংস্থা মোট 10 লক্ষ শেয়ার জারি করেছে। যার প্রতিটি শেয়ার এর মূল্য 10 টাকা করে, সেই সংস্থার অফার অনুসারে আপনি আপনার চাহিদার মতো শেয়ার কিনতে পারবেন। আবার আপনি যখনই চাইবেন আপনার শেয়ার অন্য যে কোনও ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে পারবেন। এখানে আপনি যখনই শেয়ার কেন বেচা করবেন তখন আপনাকে কোনো ব্রোকার এর কাছে একটি ডিমেট একাউন্ট খুলতে হবে, এবং সেই ব্রোকারের মাধ্যমেই আপনাকে শেয়ার কেনা-বেচা করতে হবে এবং এই লেনদেনের কারণে তারা তাদের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কিছু কমিশন চার্জ করে থাকে।
তালিকাভুক্ত সমস্ত সংস্থার শেয়ারের মূল্য বিএসই(BSE) / এনএসইতে(NSE) রেকর্ড করা হয়ে থাকে। সমস্ত তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ারের মূল্য তাদের মুনাফা অর্জনের ক্ষমতা ও বাজারে তাদের দ্রব্যের লেনদের প্রক্রিয়া অনুযায়ী ওঠানামা করে থাকে। সমস্ত শেয়ার বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে ভারতের সিকিওরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড বা SEBI।
কেবল SEBI এর অনুমতি পাওয়ার পরেই কোনও সংস্থা তাদের শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত করতে পারে, কোনো কোম্পানি প্রথমবার শেয়ার বাজারে ছাড়লে তাকে IPO শেয়ার বলে বা ইনিসিয়াল পাবলিক অফার।
প্রতি ত্রৈমাসিক / অর্ধ বা বার্ষিক ভিত্তিতে বিভিন্ন সংস্থা তাদের শেয়ারহোল্ডারদের মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে। যেকোনো সংস্থার কার্যক্রম সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাইলে আপনি সেবি বা বিএসই / এনএসইর ওয়েবসাইটে গেলে খুঁজে পাবেন।
কীভাবে কোনও সংস্থা বিএসই / এনএসইতে তালিকাভুক্ত হয়?
শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হতে সংস্থাগুলিকে শেয়ার বাজারের সাথে একটি লিখিত চুক্তি করতে হয় এবং সংস্থাটি তার প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি সেবি এর কাছে জমা দেয়। সেবি’র তদন্তে তথ্য সঠিক হওয়ার সাথে সাথে এবং সমস্ত শর্ত পূরণ হওয়ার সাথে সাথেই সংস্থাগুলি বিএসই / এনএসইতে তালিকাভুক্ত হয়ে যায়।
কেন শেয়ারের দাম ওঠানামা করে?
সংস্থার গতিবিধি যেমন সংস্থার পারফরম্যান্স, প্রাপ্ত বা ছিনিয়ে নেওয়া অর্ডার, কারবারের ভালো ফলাফল, লাভ বাড়ানো / হ্রাস করার মতো তথ্যের ভিত্তিতে শেয়ারের দাম ওঠানামা করে। যেহেতু তালিকাভুক্ত যেকোনো সংস্থা প্রতিদিনের ভিত্তিতে ব্যবসা করে থাকে তাই সংস্থাগুলির বাজারের অবস্থানেও প্রতিদিন কিছুটা পরিবর্তন দেখা যায়, এই মূল্যায়নের ভিত্তিতে ও চাহিদার ওঠানামার কারণে তাদের শেয়ারের দামগুলি ওঠানামা করে থাকে।
যদি কোনো সংস্থা চুক্তি বা শর্ত অনুযায়ী মেনে না চলে, তবে সেবিই বিএসই / এনএসই থেকে সংস্থাটিকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় এবং পরবর্তীকালে আবার একটি নতুন সংস্থাকে প্রবেশ করানো হয়।
সম্ভবত আপনি জানেন না, ওয়ারেন বাফেট, বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন যিনি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে বিলিয়নেয়ার হয়েছেন।
আপনি কীভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন?
আপনাকে প্রথমে কোনো ব্রোকারের সাহায্যে একটি ডিমেট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এর পরে আপনাকে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে ডিমেট অ্যাকাউন্টটি লিঙ্ক করতে হবে।
আপনি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে আপনার ডিমেট অ্যাকাউন্টে তহবিল বা পরিমান মতো অর্থ স্থানান্তর করতে হবে এবং এর পরেই আপনার ব্রোকারের ওয়েবসাইট অথবা app থেকে লগ ইন করে যেকোনো অর্ডার বা আপনার ইচ্ছা মতন যেকোনো সংস্থার শেয়ার কিনতে পারবেন।
এর পরেই সেই শেয়ারগুলি আপনার ডিমেট অ্যাকাউন্টে যুক্ত করা হবে। আপনি যে কোনও কার্য দিবসে ব্রোকারের মাধ্যমে যখনই চান আপনি শেয়ারগুলি বিক্রি করতে পারেন।
More Stories
এক কাজ এক পরিবার যোজনা কি ? Ek Naukri Ek Parivar Yojana – Indian Government
10 টি উপায়ে আপনি এখন থেকেই অনলাইনে আয় করতে পারেন, কোনোরকম বিনিয়োগ ছাড়াই – Online Income 2021