কাজুবাদাম হল গ্র্রীষ্মমণ্ডলীয় জায়গার ত্রুটিহীন আকারের নোনতা-মিষ্টি আরামদায়ক স্বাদ সহ সত্যিকারের উপহার। এই ছোট্ট মুচমুচে সময় কাটানোর মতন পছন্দের স্ন্যাক্স ভারতীয় রান্নাঘরে জায়গা করে নিয়েছে। কাজুবাদামের ভেতরে প্রচুর পরিমাণ মিনারেল, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ কাজুবাদামের তাছাড়াও অনেক উপকারিতা আছে।
কাজুবাদামের উপকারিতা পাবার জন্য এটা কাঁচা, রোস্ট করে কিংবা সুস্বাদু রূপে খাওয়া যায়। উপকারিতার তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎকৃষ্ট উৎস
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো একপ্রকার যৌগ, যা কোষের অক্সিডেটিভ ক্ষতি কমায়। কোষের ক্ষতি করা ফ্রি রাডিক্যেলকে এটা নিষ্ক্রিয় করে। কাজুবাদামের মধ্যের সবথেকে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো ক্যারোটিনয়েড ও পলিফেনল। এইগুলো শরীরকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি সামলাতে সাহায্য করে, জ্বালাভাব-ফোলা কমায় ও রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
হৃৎপিণ্ডের জন্য স্বাস্থ্যকর
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে কাজুবাদামের মধ্যে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে এবং এইগুলো অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক, হৃৎপিণ্ড প্রতিরোধ ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি গুণসম্পন্ন। কাজুবাদামের মধ্যের হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যপোযগী ফ্যাটি অ্যাসিড (ওলিক ও পালমিটোলিকের মতন মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট) এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং এইচডিএল-র বহন ক্ষমতা বাড়ায়, যা হৃৎপিণ্ড থেকে কোলেস্টেরল শোষণ করে ভাঙার জন্য সেটা লিভারের নিয়ে যায়। এটা ছাড়া, এইগুলো রক্তচাপ ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমায়।
সফলভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
সাধারণত, কেউ যদি রোজ মাঝারি পরিমাণ বাদাম খায় তাহলে দ্রুত ওজন কমবে। কাজুবাদাম হলো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাণ্ডার, যা মেটাবলিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরায়। বলা হয়, যে এটা কম পরিমাণ ক্যালোরি দেয়। তাছাড়াও, ফাইয়ার ও প্রোটিনের উপস্থিতি পেট ভরিয়ে রাখে। এইভাবে, এটা কার্যকারীভাবে ওজন কমায়।
হাড়ের সুস্থতা সুনিশ্চিত করে
কাজুবাদাম কপার সমৃদ্ধ, যা কোলাজেন ও ইলাস্টিন বজায় রাখে। এইগুলো হাড়ের বাঁধন তৈরি করে। কাজুবাদাম ম্যাগনেশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস, যা হাড়ে ক্যালসিয়াম সংগ্রহ করে হাড় বানাতে সাহায্য করে। এর মধ্যের ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও ম্যাগনেশিয়ামের সাথে একসাথে কাজ করে অস্টিওপোরেসিস প্রতিরোধ করে।
রক্তের অসুখ দূর করে
কপারের অপ্রতুলতা থেকে আয়রনের অভাব দেখা যায়, যেমন রক্তাল্পতা। এই পরিস্থিতিতে একজনের লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা কমে যায়। কাজুবাদামের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ কপার ও আয়রন থাকে। কপার শরীর থেকে ফ্রি রাডিক্যাল সরায় এবং এটা আয়রনের সাথে একসাথে কাজ করে লোহিত রক্ত কণিকা বানায়।
ওরাল হেলথের জন্য উপকারী
কাজুবাদাম মাড়ি ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে। এটা চিবানোর সময়য়ে, প্রচুর পরিমাণ লালা বা স্যালাইভা তৈরি হয়, যা ক্যাভিটির জন্য দায়ী স্ট্রেপ্টোকক্কাস মুটানস ব্যাকটেরিয়াকে নিষ্ক্রিয় করে তাছাড়া, প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ খাবার চিবালে সেটা মাড়ি ও দুটো দাঁতের মধ্যের জায়গা পরিষ্কার করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কাজুবাদামের মধ্যের জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো ভালোভাবে কাজ করায়। এটা একজনের শরীরে ইমিউন সিস্টেম সেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইম তৈরিতে সাহায্য করে এবং ইমিউন সিস্টেম রেগুলেটারকে কাজ করতে সাহায্য করে।
হজমশক্তি বাড়ায়
কাজুবাদামে ওলিক অ্যাসিড ও পালমিটিক অ্যাসিডের মতন ডায়াটারি ফাইবার থাকে, যা ভালো করে হজম করায় এবং অনেক ধরণের হজম সংক্রান্ত অসুখ কমায়। অবশ্য মাঝারি পরিমাণ খেতে হবে নাহলে এইজন্য পেট ফুলতে পারে ও অন্ত্রে গ্যাস হতে পারে।
অন্যান্য উপকারিতা
বিশ্বাস করা হয়, যে একজনের রোজকার খাদ্যতালিকায় কাজুবাদাম যোগ করলে চোখ ও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়, চুল ও ত্বকের সুস্থতা বাড়ে এবং গলস্টোনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাওয়া যায় ও থাইরয়েডের কাজ নিয়ন্ত্রিত হয়।
বাজারে প্রাপ্ত অধিকাংশ কাজুবাদাম সেইভাবে পরিষ্কার না করেই বিক্রি করা হয় এবং সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হয় না বলে এইগুলো খাওয়া নিরাপদ নয়। সুতরাং, খাঁটি জায়গা থেকে আসল কাজুবাদাম কিনুন।
কাজুবাদাম হলো জমাটি, মিষ্টি স্বাদের বাদাম, নরম এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রচুর উপকারিতা দেয়। দিনে একবার একমুঠো কাজুবাদাম খেলে সেটা স্বাস্থ্যের অনেক উপকার করে। আপনি ঘরোয়া রান্নাতেও আসল কাজুবাদাম দিতে পারেন।
অরুণাভ মৈত্র
More Stories
16 Valuable Benefits Of Apple Cider Vinegar ।।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের ১৬ রকম মূল্যবান ব্যবহার ।।
What Is Monkeypox? Causes, Symptoms And Treatment | মাঙ্কিপক্স কি? কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা।
How to prevent ovarian cysts ।
10 Home Remedies for Ovarian Cysts।